হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশ একটি সর্ব-ইসলামবাদ এবং মৌলবাদী সংগঠন যা বিশ্বব্যাপী ইসলামিক খিলাফতের প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে। ১৯৫৩ সালে জর্ডানে প্রতিষ্ঠিত এই সংগঠনটির লক্ষ্য হলো মুসলিম দেশের মধ্যে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং শাসনকাজ পরিচালনার জন্য ইসলামিক খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশে এই সংগঠনটির কার্যক্রম বেশ বিতর্কিত এবং অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির মধ্যে থাকে।
হিযবুত তাহরীরের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শাইখ তাকীউদ্দিন আল-নাবাহানি। সংগঠনটি বিশ্বব্যাপী ইসলামি খিলাফত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করে এবং এর আদর্শ মুসলিম উম্মাহর একক শাসন ব্যবস্থার মধ্যে সমবেত হওয়া। এর মানে হলো, ইসলামি আইন তথা শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা এবং ঐতিহ্যগত ইসলামী সমাজব্যবস্থার প্রতি বিশ্বস্ত থাকা।
বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীর তার কর্মসূচি প্রচার করে থাকে সামাজিক মাধ্যমে, সেমিনার, আলোচনা সভা, এবং রাস্তায় মিছিল করে। এরা সাধারণত সরকারী শাসন ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে এবং তাদের মত অনুযায়ী ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করে থাকে।
বাংলাদেশে হিযবুত তাহরীরের কার্যক্রম গত কয়েক বছরে বেশ বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ সরকার এই সংগঠনটিকে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং তাদের কর্মকাণ্ডকে রাষ্ট্রের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে সংগঠনটি নিষিদ্ধ করা হয়। এর পর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তবে, সংগঠনটি এখনও কিছু কিছু অঞ্চলে গোপনে কাজ করছে এবং তাদের আদর্শ প্রচার করছে।
বর্তমানে, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশে আইনি নিষেধাজ্ঞা এবং বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার পরেও কিছু সংখ্যক সদস্য তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এসব সদস্য সাধারণত গোপনে সভা-সমাবেশ আয়োজন করে থাকে এবং সংগঠনের উদ্দেশ্য প্রচার করে থাকে। সরকার এই ধরনের গোপন কর্মকাণ্ড দমন করতে আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছে।
হিযবুত তাহরীরের আদর্শ এবং কার্যক্রম নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে, কারণ সংগঠনটির কার্যক্রমের ফলে আইন ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপন্ন হতে পারে। তবে, কিছু ইসলামিক সংগঠন এবং ধর্মীয় নেতা হিযবুত তাহরীরের উদ্দেশ্যকে সমর্থন করে এবং এর কার্যক্রমকে ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য একটি সঠিক পথ হিসেবে দেখেন।
হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশের কার্যক্রম একটি বৈশ্বিক ইসলামী আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত, কিন্তু তার কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংগঠনটির প্রতি নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে, তবে সংগঠনটি এখনও কিছু ক্ষেত্রে তাদের প্রভাব বিস্তার করছে। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানার জন্য নিয়মিত সংবাদ এবং সরকারের আপডেটগুলি অনুসরণ করা প্রয়োজন।
Leave a Reply