ভাস্কর্যের বিকল্প হিসেবে ‘মুজিব মিনার’ নির্মাণের যে প্রস্তাব হেফাজতে ইসলামসহ বিরোধীরা দিয়েছেন, তা নাকচ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ভাস্কর্য নির্মাণকাজ, যেটা নির্মাণাধীন, নির্মাণকাজ চলবে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণ করব। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছেন, এটি তারা দেখুক এটি তাদের বিষয়।
সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানান, ধোলাইপাড়ে নির্মাণাধীন ভাস্কর্য হবেই। ভাস্কর্যের কাজ চলবে।
‘নির্মাণাধীন ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ চলবে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণ করব। তারা (আলেম) যে প্রস্তাব দিয়েছে, এটা তাদের বিষয়। ভাস্কর্য বিভিন্ন দেশে হয়েছে।
জাতির জনকের ভাস্কর্যের বিরোধিতায় বক্তব্য দেওয়ায় ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ অভিযোগে সোমবার দুটি মামলা করা হয়েছে ঢাকার আদালতে। মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এ আবেদন করেন।
আওয়ামী লীগ বা যুবলীগ কেন মামলা করল না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু কি কোনো দলের, নন পলিটিক্যাল মঞ্চ থেকে করা ভালো বলে আমি মনে করি।
ভাস্কর্য ভাঙচুরে কাউকে হুকুমের আসামি করা হবে কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, আমরা যদি সেরকম প্রমাণ পাই কারো বিরুদ্ধে হুকুম দিয়েছে সাক্ষ্য প্রমাণ থাকে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মামুনুল হক রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছেন। ভাস্কর্য নির্মাণ করা হলে তা বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকিও দিয়েছেন। আরও কয়েকজন আলেমও এ নিয়ে ‘উস্কানিমূলক বক্তব্য’ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারে আছি ক্ষমতায় আছি আমাদেরকে ঠাণ্ডা মাথায় থাকতে হবে। কথায় কথায় মাথা গরম করলে চলবে না, বুঝে শুনে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ধর্ম একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সেনসিটিভ ইস্যু। কাজেই এখানে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিষয়গুলো দেখছেন এবং এটা ট্যাকল করছেন সেভাবে, আমরা অহেতুক দেশে একটা অশান্তি-বিশৃঙ্খল পরিবেশের উসকানি দিতে চাই না। আমরা যুক্তি দিয়ে বলতে চাই, তারা যে বলছে তা সঠিক না।
হেফাজতে ইসলামের নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন, প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ দেবেন কিনা সেই প্রশ্নে কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাৎ দেবেন কিনা বা কবে দেবেন- এটা আমার জানা নেই।
হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের কওমি মাদ্রাসার ১৪ লাখ শিক্ষার্থী আছে। তারা মূলধারা থেকে দূরে আছে। তাদের শিক্ষাব্যবস্থার মূলধারায় আনার জন্য দাবিটাকে ন্যায়সম্মত মনে হয়েছে। সে জন্য তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তার মানে এই নয়, তাদের সঙ্গে সমঝোতা করা হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয় যে তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা করব।
ভাস্কর্য বিরোধিতায় বিএনপি-জামায়াতের উসকানি আছে কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।
কুষ্টিয়ার ঘটনা সরকার নিজে ঘটিয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের দাবির বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি যদি বলি, বিএনপি নিজেই তৈরি করেছে ঘটনাটি বিএনপি ঘটিয়েছে। বিএনপি এখানে উসকানিতে আছে কিনা আমরাতো দেখছি।
‘তারা তো একটা আন্দোলনও নিজেরা করতে পারেনি। তারা আজকে বড় বড় কথা বলে এক হাজার লোক নিয়ে একটা বিক্ষোভ মিছিল করতে পারেনি নিজেদের নেতার জন্য তাদের যে অক্ষমতা-দুর্বলতা তারা এটা ঢাকবে কীভাবে’-যোগ করেন ওবায়দুল কাদের।
Leave a Reply